৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জো বাইডেন। শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৭টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন। এর মধ্য দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেশ কিছু বিতর্কিত নীতি বদলে দিয়েছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা সিএনএন এর বরাতে জানা যায় ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ‘সংকট মোকাবিলার জন্য অপচয় করার মতো কোনো সময় আমাদের হাতে নেই। আমি আমেরিকার মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু করতে যাচ্ছি।’
বাইডেনের স্বাক্ষরিত ১৭টি নির্বাহী আদেশের তিনটিই করোনাভাইরাস মোকাবিলার বিষয়ক। দুইটি মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে আছে জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন নিয়ে। ৩০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরানোর নির্বাহী আদেশেও স্বাক্ষর করেছেন তিনি। এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা তথা সমতা নিশ্চিত করার আদেশ দিয়েছেন তিনি।
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে তহবিলের জন্য ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ডিক্লারেশন বাতিল করেছেন। অর্থাৎ, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ স্থগিত করা হয়েছে এবং সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ট্রাম্পের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিয়েছেন বাইডেন। নির্বাচনের আগেই ক্ষমতায় এলে হোয়াইট হাউজে নিজের প্রথম দিনই এটি তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। এ চুক্তিতে ফেরার বিষয়ে জাতিসংঘে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে গত বছর ওই চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার যে প্রক্রিয়া ট্রাম্প শুরু করেছিলেন, তা থামাতেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে হোয়াইট হাউজে দেওয়া অভিষেক ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ কিংবা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মূল কাঠামোতে আঘাত হানেন বাইডেন। দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ভোট জিততে বিভক্তির সূত্রে ট্রাম্প তাদের বিপরীতে শত্রু হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মুসলিম অভিবাসী আর মেক্সিকানদের। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের সেই বিদ্বেষী রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে বারবার বিভক্তির বিপরীতে ঐক্য জিতেছে।
ক্ষোভ, ঘৃণা, উগ্রবাদ, বিচারহীনতা, সহিংসতা, বেকারত্ব আর হতাশা কাটিয়ে উঠতে আমেরিকার জনগণের ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন জো বাইডেন। বলেছেন, ‘ঐক্যের মাধ্যমে আমরা মহৎ কিছু করতে পারি, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে পারি।’