আরএমপি নিউজ: অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার স্থগিত করছে একের পর এক দেশ। এই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালি। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সহায়তায় তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বেশ কয়েকজনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগে এর ব্যবহার আপাতত বন্ধ রেখেছে বিভিন্ন দেশ।
যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, তাদের ভ্যাকসিন নেয়ার পর শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি তৈরি হয় এমন কোনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের তৈরি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এমন লোকজনের ওপর নিরাপত্তা তথ্য পুনঃমূল্যায়ন করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে ভ্যাকসিন নেয়া একজনের মৃত্যুর ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ায় এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়।
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে থাইল্যান্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ব্যবহার স্থগিত করেছে। শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিজে ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল। তবে সেই পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করা হয়েছে। এরপর বুলগেরিয়াতেও এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়েছে।
সম্ভাব্য মারাত্মক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধের পর সোমবার জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালি জানিয়েছে তারাও এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ করছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যাকসিন ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এদিকে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা দেড় কোটির বেশি মানুষের নিরাপত্তা তথ্য খুবই যত্ন সহকারে পুনঃমূল্যায়ন করা হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন থেকে পালমোনারি এমবোলিজমের ঝুঁকি বাড়া, রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা বা থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন বয়স, লিঙ্গ এবং প্রায় সবগুলো দেশের পুনঃমূল্যায়ন একই রকম বলে জানানো হয়েছে।
জার্মান প্রশাসন গত সপ্তাহে সতর্ক করেছিল যে, সেখানে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। অপরদিকে, ইতালিতে কঠোর লকডাউন জারি রয়েছে এবং প্যারিসের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্পান বলেন, ‘যদিও ভ্যাকসিন গ্রহণের পর রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা খুবই কম তবুও আমরা এটা চালিয়ে যেতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘এটা পেশাদারি সিদ্ধান্ত। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই।’