আরএমপি নিউজঃ সম্প্রতি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা ডিরেক্ট সেলস ব্যবসার
ধরণ পাল্টিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে কিছু কোম্পানী। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত
হচ্ছে দেশের চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীরা। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয় অফারের
প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে বিভিন্ন এমএলএম কোম্পানী।
২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রণয়ন করা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম
(নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে করা হয় বিধিমালা, যা আবার সংশোধন করা হয় একই
বছরের ২২ জুলাই। আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা করা যায় না। সরকারের অনুমোদন
ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যে সমস্ত কোম্পানী ব্যবসা করছে এদের
বেশিরভাগই বৈধ অনুমোদন নেই, অফিস নেই এবং দেশের প্রচলিত ব্যবসার সাথে কোন মিলও নেই।
ভূক্তভুগী সজীব (ছ্দ্ম নাম) রাজশাহী’র নিকট হতে জানা যায়, রাজশাহী
মহানগরীতে বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সী (এমএলএম) কোম্পানী চাকুরী প্রত্যাশী বেকার
যুবক-যুবতীদের নিকট হতে সিভিবাবদ ৫৬০ টাকা এবং কোম্পানীতে যোগদান বাবদ এককালীন ৩৬,০০০
হাজার টাকা গ্রহণ করে যার মধ্যে থাকা-খাওয়ার জন্য ১৮,০০০ টাকা এবং পণ্য সামগ্রী বাবদ
১৮,০০০ টাকা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় যে, কোম্পানী প্রতি জনের জন্য ব্যয় করে ১৩,৫০০
টাকা যার মধ্যে ৮,০০০ টাকা মূল্যের এলইডি মনিটর এবং ৫৫০০ টাকা মূল্যের একটি মোবাইল
ফোনসেট। কোম্পানী প্রতি জনের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে ৪৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। বেকার
যুবক-যুবতীরা নতুনকর্মী সংগ্রহ করে থাকে আর এই ভাবেই বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সী
বিপুল অর্থ আত্মসাত করছে। আরো জানা যায় কোম্পানীর কতিপয় সদস্য বোয়ালিয়া মডেল থানার
দক্ষিণ দড়িখড়বোনা এলাকায় চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের বেকারত্বের অসহায়ত্বকে
কাজে লাগিয়ে চাকুরি বা কাজ দেয়ার নামে কৌশলে প্রতারণামূলকভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আটক করে
রেখেছে।
বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সীর প্রতারনার ও ভিকটিমদের জোড়পূর্বক
আটক রাখার ঘটনায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু
কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নির্দেশনায় বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব
নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম এর নেতৃত্বে একটি টিম আজ ২২ মার্চ ২০২১ রাত ০১.৩৫ ঘটিকায় বোয়ালিয়া মডেল থানার দক্ষিণ দড়িখড়বোনা এলাকায় অভিযান
পরিচালনা করে ০৪ জনকে গ্রেফতার করে এবং তিনটি বাড়ী তল্লাশী করে মোট ৩৭ জন চাকুরী প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীকে উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানার
মেছপাড়া জিউপাড়া গ্রামের মৃত আঃ মান্নান মন্ডলের ছেলে মোঃ মোহাইমিনুল হক মিনু (২৪)
ও তার স্ত্রী মোসাঃ শিলা বেগম (২০), নাটোর জেলার সদর থানার জালালাবাদ গ্রামের মোঃ আসলাম
আলীর ছেলে মোঃ শিমুর হোসেন (১৯) এবং রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার যষ্ঠিতলা
গ্রামের রঞ্জন দাসের ছেলে রাকেশ দাস (৩০)।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে ০১ টি জিএসটি
মনিটর উদ্ধার করা হয় এবং আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়।