ভিকটিম ফারদিন ইসনা আষাড়িয়া রাব্বী (১৯) দ্বাদশ বিজ্ঞান সরকারী সিটি কলেজ, রাজশাহী’কে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতকারী ০৬/০৮/১৯ খ্রিঃ ভোর অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকার সময় হেতেমখাঁ ছোটমসজিদ সংলগ্ন পুরাতন পাঁচতলা বিল্ডিং এর সামনে পাকা রাস্তার উপর মাথায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করতঃ গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে হত্যা করা হয়।
এ সংক্রান্তে বোয়ালিয়া মডেল থানার মামলা নং-২০, তাং-০৬/০৮/১৯ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। মামলটি থানা পুলিশ ব্যাপক ও নিবিড় ভাবে তদন্ত অব্যাহত রাখে। তদন্তের একপর্যায়ে ০৭/০৮/১৯ খ্রিঃ আসামী মোঃ রনক (২৩), পিতা-মৃত কুদরত আলী, সাং-হেতেমখাঁ ছোট মসজিদের পাশের্^ বর্নালী হলের পিছনে, থানা-বোয়ালিয়া, মহানগর রাজশাহী’কে ৭.২ গ্রাম হেরোইন সহ গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, উক্ত আসামী মোঃ রনক (২৩), ভিকটিম ফারদিন ইসনা আষাড়িয়া রাব্বী (১৯) হত্যা মামলার ঘটনার সহিত সরাসরি সম্পৃক্ত। এমতাবস্থায়, ০৮/০৮/১৯ খ্রিঃ আসামী মোঃ রনক (২৩) হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো ও পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আসামী মোঃ রনক (২৩) ১৪/০৮/১৯ খ্রিঃ পুলিশ রিমান্ডে গ্রহণ করা হয়। ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদে আসামী রনক উক্ত হত্যা মামলার ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। আসামীর দেয়া তথ্য ও সনাক্ত মতে তার বাসার শয়ন কক্ষ হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ১৫ ইঞ্চি ধারালো দা (দাউলি) আলামত হিসেবে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়া হয়। আসামী রনক ১৭/০৮/১৯ খ্রিঃ বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মোঃ সেলিম রেজা, এমএম-৫, রাজশাহী এঁর আদালতে হত্যা ঘটনার সবিস্তার বর্ণনা করে স্বেচ্ছায় ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আসামী তার জবানবন্দিতে জানায়, তিনি বিভিন্ন নেশায় আসক্ত। ঘটনার দিন একাই ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে তার পরিহিত গোল গলা গেঞ্জির ভিতরে বর্ণিত দা (দাউলি) লুকিয়ে রাখেন। ঘটনার দিন, ০৬/০৮/১৯ খ্রিঃ ভোর অনুমান ০৫.১৫ হতে ০৫.৩০ ঘটিকার সময় আসামী ঘটনাস্থলের পাশের্^ আমরুর কনফেকশনারীর পাশের্^ ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে ওৎপেতে থাকে। ঐ সময় ভিকটিম রাব্বী তিতুমীর ট্রেন ধরার উদ্দেশ্যে ঘাড়ে ও কাধে ব্যাগ নিয়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে বর্ণালীর মোড়ের দিকে যেতে থাকে। তখন আসামী রনক ভিকটিম রাব্বী এর পথরোধ করে দা বের করে ছিনতাই এর চেষ্টা করে। ভিকটিম দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। দুইজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি, পাছড়াপাছড়ি হয়। এক সময় ভিকটিম আসামীকে ফেলে দেয় এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। ঐ সময় আসামী রনক রেগে গিয়ে পিছন থেকে ভিকটিম রাব্বী’র মাথায় দা দিয়ে সজোরে কোপ মারেন। ভিকটিমের মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। ভিকটিম মাটিতে পড়ে যায়। আসামী রনক অবস্থা বেগতিক দেখে, আশেপাশের লোকজন ও মসজিদের লোকজন দ্বারা ধৃত হওয়ার আশংকায় টাকা, ম্যানিব্যাগ, মোবাইল, ব্যাগ না নিয়েই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আসামী হেরোইন এর টাকা সংগ্রহের জন্য একাকী দা হাতে ছিনতাই এর চেষ্টা করার সময় ভিকটিমের সহিত ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সজোরে ভিকটিমের মাথায় ধারালো দা দিয়ে রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন। আসামী জানান তিনি ভিকটিমকে পূর্বে চিনতেন না। ঘটনা ঘটার পর বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারেন ভিকটিম সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং মেসে বসবাস করতেন।
এভাবে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্যের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ ক্লু-লেস, কলেজ ছাত্র ফারদিন ইসনা আষাড়িয়া রাব্বী (১৯)-এর হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দা (দাউলি) উদ্ধার, আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে।