চীনের হাইব্রিড ধানের জনক হিসেবে পরিচিত খ্যাতনামা কৃষিবিদ ইউয়ান লংপিং আর নেই। চীনে ইউয়ান লংপিংকে বলা হয় হাইব্রিড ধানের জনক। শনিবার দেশটির হুনান প্রদেশের রাজধানী চাংশার একটি হাসপাতালে (৯১) বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশাস ত্যাগ করেন। লংপিং বেশ কিছু শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাত দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, হাইব্রিড ধান বিকাশে সহযোগিতা ও বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের অনাহার দূর করায় অবদান রাখা লংপিংকে জাতীয় বীর হিসেবে দেখে চীন। শুধু চীন নয়, সমগ্র বিশ্বের কৃষি খাতে রীতিমতো বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭৩ সালে বিশ্বের প্রথম উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ধানের চাষ শুরু করেন লংপিং। ইউয়ান লংপিংয়ের আবিষ্কার Nan-you No. 2 চীনের ধান উৎপাদনের হারে ব্যাপক বৃদ্ধির পেছনে ভূমিকা রেখেছিল। প্রচলিত জাতের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি ধান উৎপাদন হয় হাইব্রিড বীজে।
১৯৫০ সালে চীনে ধানের উৎপাদন হতো ৫.৬৯ বিলিয়ন টন। ২০০০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯.৪৭ বিলিয়ন টনে এবং এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ইউয়ান লংপিং।
জীবনের শেষ দিনগুলোতেও ইউয়ান লংপিং ধান নিয়ে গবেষণা করেছেন। গত মার্চে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে গবেষণা কার্যক্রমে ছেদ পড়ে। ২০০৪ সালে ইউয়ান লংপিং বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। ধান উৎপাদন বৃদ্ধিতে অসাধারণ অবদানের জন্য তাকে এ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ইউয়ান লংপিংয়ের উদ্ভাবনে শুধু চীনই যে উপকৃত হয়েছে তা নয়। বিশ্বের অন্য দেশগুলোও তার উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে উপকৃত হয়েছে। ইউয়ান লংপিং ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশ, ভারত, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র সফর করে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে পরামর্শ দিয়েছেন। ৫০টির বেশি দেশের বিজ্ঞানীদের তারা প্রশিক্ষণ দিয়েছে।