হারারেতে একমাত্র টেস্টে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ২২০ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। ৪৭৭ রান তাড়া করতে নেমে শেষ দিনে মেহেদী মিরাজ আর তাসকিন আহমেদের বোলিং তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায় ২৫৬ রানে।
ঘটনাবহুল এই টেস্টে চোটের কারণে খেলতে পারেননি নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবাল, ১৬ মাস পর হুট করেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে একাদশে জায়গা দেয়া, ব্যাট করতে নেমেই ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রানের ইনিংস খেলা এবং দ্বিতীয় দিনেই সতীর্থদের জানিয়ে দেয়া আর টেস্ট খেলবেন না মাহমুদউল্লাহ।
এক টেস্টে এত ঘটনা পেছনে ফেলে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। হারারেতে সফরের একমাত্র টেস্টে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথম দিনেই বেশ চাপে পড়ে সফরকারীরা।
দলীয় ৬৮ রানের ভেতর তিন টপ-অর্ডারের বিদায়ের পর মুমিনুল হকের ৭০ রানের ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এরপর লিটন দাসের ৯৫ রানের ইনিংস বড় সংগ্রহের পথ দেখায়।
লিটনের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের ১৯১ রানের জুটি, মাহমুদউল্লাহ খেলেন ১৫০ রানের ইনিংস। সঙ্গে তাসকিনও তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক (৭৫)।
সবমিলে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৪৬৮ রান। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ৪ উইকেট নেন ব্লেসিং মুজারাবানি, ২টি করে উইকেট নেন ডোনাল্ড তিরিপানো, ভিক্টোর নায়ুচি এবং ১ উইকেট করে নেন রিচার্ড নাগারভা ও মিল্টন শুম্বা।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন দুই ওপেনার। মিল্টন শুম্বা ৪১ রানে ফিরলেও অভিষেকেই অর্ধশতক হাঁকান তাকুদজওয়ানসে কাইতানো। সঙ্গে ব্রেন্ডন টেইলরের ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ের ফিরে জিম্বাবুয়ে।
টেইলর ৮১ রান করে ফিরলে কাইতানো লড়াই করে যান বাকিদের নিয়ে। কাইতানো শেষ পর্যন্ত ৮৭ রান করে ফেরেন সাজঘরে। শেষ দিনে রেগিস চাকাবা করেন ৩১ রান।
সবমিলে জিম্বাবুয়ে অল-আউট হয়ে যায় ১৯২ রানে পিছিয়ে থেকে ২৭৬ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে ৫ উইকেট নেন মিরাজ, ৪ উইকেট নেন সাকিব ও ১ উইকেট নেন তাসকিন।
১৯২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দুই টাইগার ওপেনার সাইফ হাসান ও সাদমান ইসলামের ৮৮ রানের জুটিতে বড় লিডের পথে হাঁটে বাংলাদেশ। সাইফ ৪৩ রান করে বিদায় নিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৯৬ রান যোগ করেন সাদমান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। সাদমান ১১৫ ও শান্ত অপরাজিত থাকেন ১১৭ রানে। বাংলাদেশ লিড পায় ৪৭৭ রানের।
বাংলাদেশের দেয়া পাহাড়সম লিড টপকানোর লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকরা চতুর্থ দিনেই হারায় তিন টপ-অর্ডারকে। তবে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়াই চালিয়ে যান টেইলর। যদিও তাকে যোগ্য সং দিতে পারেননি বাকিরা। টেলর সাজঘরে ফেরেন ৯২ রান করে।
টেইলরের বিদায়ের পর একা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন ডোনাল্ড তিরিপানো। ৫২ রানের ইনিংস খেলতে খরচ করেন ১৪৪টি বল। শেষে ব্লেসিং মুজারাবানির ৩০ রান শুধু ব্যবধান কমিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ধ্বসিয়ে দিতে সমান ৪টি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মিরাজ। এছাড়া ১টি করে নেন সাকিব ও এবাদত হোসেন।