টোকিও অলিম্পিকের ইতিহাসে একক ইভেন্টে এই প্রথম একই দিন দুই ভাই-বোন স্বর্ণ জয়ের নজির স্থাপন করলেন। গতকাল জুডোতে স্বর্ণ জিতে অনন্য ইতিহাস গড়লেন স্বাগতিক দেশ জাপানের ভাই-বোন আবে হিফুমি ও আবে উতা। দুজনের কল্যাণে গতকাল জুডো থেকে দুটি স্বর্ণ আদায় করে নেয় জাপান। নারীদের ৫২ কেজি ওজন শ্রেণীতে আবে উতা ও ছেলেদের ৬৬ কেজি ওজন শ্রেণীতে আবে হিফুমি স্বর্ণ জয় করেন।
নিপ্পন বুদোকান স্টেডিয়ামে বর্তমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের আমান্দিনে বুশারকে হারিয়ে আনন্দে কেঁদেছেন আবে উতা। লড়াইটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি ছিল বলেই জয় শেষে অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি ২১ বছর বয়সী এ জুডোকা, যিনি দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
আবে উতার ইপ্পন (জাপানি মার্শাল আর্টের এ খেলায় প্রতিপক্ষকে ভূপাতিত করে অর্জিত সর্বোচ্চ পয়েন্ট) জয়ের আগ পর্যন্ত কারোরই আধিপত্য না থাকায় লড়াইটা গড়িয়েছিল গোল্ডেন স্কোরে। সেখানে শেষ হাসি হাসেন আবে উতা। দীর্ঘ লড়াই শেষে আলিঙ্গন করেন দুই জুডোকা।
জয় শেষে আবে ২১ বছর বয়সী উতার অনুভূতি ঝরল এমনই, আসলে আমি এখনো বুঝে উঠতে পারছি না কী ঘটেছে। যদিও এখানে স্বর্ণপদক জেতার পর মনের মধ্যে আলোড়ন খানিকটা টের পাচ্ছি। জয়ের পর কান্না নিয়ে তিনি বলেন, এটা হয়তো ঠিক হয়নি, কিন্তু আমি নিজের আবেগটা দমন করতে পারিনি।
উতার সাফল্যের কয়েক ঘণ্টা পর জাপানিদের আরেকটি সুখবর দেন তার ভাই হিফুমি। ছেলেদের ৬৬ কেজি ওজন শ্রেণীতে স্বর্ণের লড়াইয়ে জর্জিয়ার ভাজহা মার্ভেলাশভিলিকে হারান তিনি। এটা চলতি অলিম্পিকে জুডো থেকে জাপানের তৃতীয় স্বর্ণপদক।
ফাইনাল শেষে ২৩ বছর বয়সী হিফুমি বলেন, এটি জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ দিনে পরিণত হলো। আমি মনে করি না, টোকিও অলিম্পিকের মতো এত বড় মঞ্চের চেয়ে অন্য কোথাও একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারতাম আমরা ভাই-বোন। আমি অনেক আনন্দিত। যদিও ফাইনালে আমি অনেক শান্ত ছিলাম। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিজের মতো খেলতে পেরেছি। সন্দেহাতীতভাবেই আমি খুবই রোমাঞ্চিত ছিলাম।
হিফুমির অলিম্পিক পদক আকস্মিক কোনো সাফল্য নয়। তিনি দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নও। গত ডিসেম্বরে সতীর্থ জোশিরোকে পরাস্ত করে অলিম্পিকের এ ইভেন্টে জাপানের প্রতিনিধিত্ব করার টিকিট পান। গতকাল একদিনেই টানা চারটি জয় তুলে নেন তিনি, যার মধ্যে ইপ্পনই তিনটি।