আরএমপি নিউজঃ রাজশাহী মহানগরীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অজ্ঞাতনামা এক বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর চিকিৎসা এবং মৃত্যু পরবর্তী পরিচয় সংগ্রহ করে মৃতদেহ তার স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।
ঘটনসূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ সকাল ৭ টায় বোয়ালিয়া মডেল থানার কাদিরগঞ্জ নগর ভবনের উত্তর পার্শ্বে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তিকে গাড়ী ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।
দুর্ঘটনা পরবর্তীতে সেই আহত ব্যক্তির উন্নত চিকিৎসার জন্য বোয়ালিয়া মডেল থানার আফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম এসআই মোঃ আলী আকবরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশে দেন এবং সেই সাথে তিনি আহত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্তের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও সংবাদপত্রে প্রচার করেন । কিন্তু তার পরিচয় পাওয়া যায়না। এ দিকে হাসপাতালে তার চিকিৎসা অব্যাহত থাকে। এমতাবস্থায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সকাল ৮.১৫ টায় আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এ সংক্রান্তে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়। এরপর তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ আলী আকবর অফিসার ইনচার্জ এর নির্দেশে মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতসহ ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন এবং অজ্ঞাতনামা সেই মৃত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্তের জন্য সিআইডি রাজশাহী টিমের সহযোগিতা নেন।
সিআইডি রাজশাহী টিম মৃত ব্যক্তির ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে এনআইডি সংগ্রহ করে। এনআইডি হতে সেই মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়। তার নাম মনতাজ আলী। সে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার চরতিস্তাপাড়ার নালকু মুন্সির ছেলে। পঞ্চগড় জেলার দেবিগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে মৃত মনতাজ আলীর আত্মীয়-স্বজনের সন্ধান পাওয়া যায়।
মনতাজ আলীর আত্মীয়-স্বজন আজ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ পঞ্চগড় হতে রাজশাহীতে এসে হাসপাতালে তার মরদেহ সনাক্ত করে। মনতাজ আলীর বড় ভাইয়ের ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম (২৭) বলেন, তার চাচা একজন বাকপ্রতিবন্ধী। তিনি ও তার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার ১১ বছরের একটি কন্যা সন্তানও আছে। সে প্রায় ৬ মাস পূর্বে বাসা থেকে বের হয়ে গেলেও আর ফিরে আসেনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মানবতা ও দায়িত্বশীলতায় তার চাচার মৃত দেহ ফিরে পাওয়ায় আরএমপি’র বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্টদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ দেন।
আজ মঙ্গলবার মোঃ মনিরুল ইসলামসহ তার আত্মীয়-স্বজন তার মরদেহ বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এভাবে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশের মানবিকতায় পরম নিষ্ঠা, বুদ্ধিমত্তা সেই সাথে পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ সাধন করে এক অজ্ঞাতনামা বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চিকিৎসা এবং পরিচয় সংগ্রহ, মৃত্যু পরবর্তী যাবতীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে মৃতদেহ তার আত্মীয়-স্বজনকে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।