আরএমপি নিউজঃ রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে অপহরণ করে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় গ্রেফতারকৃত আাসামীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ৬ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সুলতানাবাদ গ্রামের মোঃ আমিনুর রহমান বাবুর ছেলে মোঃ আতিকুর রহমান বাপ্পি(৩২), পঞ্চবটি খরবোনা নদীর ধারের মোঃ রানার স্ত্রী মোছাঃ কোহিনুর (৪৩) ও পবা থানার চৌবাড়ীয়া গ্রামের ফরিদ হোসেনের স্ত্রী মোছা নার্গিস নাহার হেলেনা (৫২)।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলার সুজানগর থানার মোঃ ইমরান (৫০) (ছদ্মনাম) একজন অবসরপ্রাপ্ত ইংরেজী শিক্ষক। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার কাদিরগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন। ব্যক্তিগত কাজে তিনি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে গেলে সেখানে আসামী মোছাঃ নার্গিস নাহার হেলেনার সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে শিক্ষক মোঃ ইমরানকে আসামী হেলেনা বাসায় তার নাতিসহ ৪-৫ ছাত্র-ছাত্রীকে ইংরেজী বিষয়ে টিউশনি করার জন্য অনুরোধ করে। শিক্ষক মোঃ ইমরান সরল বিশ্বাসে আসামীর কথায় রাজি হয়। এরপর আসামী হেলেনা সেই শিক্ষককে মোবাইলে ফোন করে শালবাগানে তার বাসায় যেতে বলে। গতকাল ২ অক্টোবর ২০২১ বিকেল ৩ টায় শিক্ষক ইমরান শালাবাগান মোড়ে গেলে, সেখানে পূর্ব হতে উৎপেতে পেতে থাকা হেলেনাসহ তার সহযোগীরা শিক্ষককে কৌশলে অপহরণ করে শালবাগান মোড়ে তাদের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অপর আসামী মোছাঃ কোহিনুরের সাথে জোরপূর্বক অর্ধনগ্ন অশ্লীল ছবি তোলে। এরপর অপহরণকারীরা ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেলে এসকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকী প্রদান করে। পরবর্তীতে শিক্ষক ইমরান তার আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারা বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৮ হাজার ২০০ টাকা প্রদান করে।
এ ঘটনায় শিক্ষক ইমরান ডিবি পুলিশকে মৌখিকভাবে অভিযোগ প্রদান করেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নির্দেশনায়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আরেফিন জুয়েল এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) জনাব মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও তার টিম আসামী গ্রেফতারের অভিযানে নামে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামীর অবস্থান নির্ণয় করে গত ৪ অক্টোবর ২০২১ রাত ৮.৩০ টায় রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অলকার মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে অপহরণ করে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় চক্রের মূলহোতাসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এসময় একজন পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ৬ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, পতালক আসামী ও তারা বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার ব্যক্তিদের বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে ফুঁসলিয়ে অপহরণ করে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে নারী দ্বারা অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপন ও চাঁদা আদায় করে থাকে।
পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।