আরএমপি নিউজঃ মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি সংরক্ষণ ও হৃদয়ে লালন এর জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী রাজশাহী'র বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গের সাথে আরএমপি পুলিশ কমিশনারের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ৯ নভেম্বর ২০২১ বেলা ১১ টায় আরএমপি সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ কমিশনার মহোদয় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহী'র পুলিশ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হতে ২৭ মার্চ তিন দিন রাজশাহী পুলিশ লাইন্সকে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হতে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়। সেই যুদ্ধে একসাথে ১৮ জন পুলিশ সদস্য পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। পরে ডিআইজি জনাব মামুন মাহমুদ ও এসপি জনাব এস এ মজিদকে ধরে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুই জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে শহীদ করেন। যা মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শহীদ হওয়ার ঘটনা রাজশাহীতেই ঘটেছে।
পুলিশ কমিশনার মহোদয় তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গসহ রাজশাহীবাসীর প্রাণের দাবি, রাজশাহী পুলিশ লাইন্সের গণকবরের পাশে একটি মু্ক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর স্থাপন করা। সেই দাবির বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশের মাননীয় ইন্সপেক্টর জেনারেল জনাব ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) মহোদয়কে অবহিত করলে তিনি মু্ক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর স্থাপনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা প্রদান করেন। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী'র পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে খুব দ্রুত রাজশাহী পুলিশ লাইন্স গণকবরের পাশে একটি মু্ক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর স্থাপন করা হবে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে একটি বই প্রকাশনা করা হবে।
পরিশেষে পুলিশ কমিশনার মহোদয় মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধাসহ সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য প্রদানকালে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন এবং এই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) জনাব মোঃ সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) জনাব মোঃ মজিদ আলী বিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) জনাব মোঃ সাজিদ হোসেন সহ আরএমপির উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ।