আরএমপি নিউজঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে "রক্তে মোরা বাঁধন গড়ি, রক্ত দেব জীবন ভরি" এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহী মহানগরীতে যাত্রা শুরু করলো পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি, রাজশাহী।
আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২১ বেলা ১১ টায় বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজশাহীতে "পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি, রাজশাহী" এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরএমপি'র সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতার কেটে এবং নিজে স্বেচ্ছায় রক্তদান করে "পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি,রাজশাহী"এর উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ নওশাদ আলী ও জনাব ডাঃ মুহাম্মদ মাহবুব-উল-আলম, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।অনুষ্ঠাটি সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) জনাব মো: সুজায়েত ইসলাম।
"পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি রাজশাহী" এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার মহোদয় বলেন, আরএমপিতে পুলিশ ও ননপুলিশ মিলে মোট ৩২১৫ জন কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। অধিকন্ত রাজশাহী জেলা পুলিশ, আরআরএফ, সিআইডি, পিবিআই, নৌ-পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজশাহী হতে চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন। বাংলাদেশ পুলিশের কর্মক্ষেত্রে ঝুকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করাকালে অথবা তাদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই রক্তের প্রয়োজন হয়। আর এই রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়েই পুলিশ এবং ননপুলিশ সদস্যদের বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয় বা অনেকেই রক্ত সংগ্রহ করতে পারেন না। এইসব দিক বিবেচনায় আরএমপি'র উদ্যোগে "পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি রাজশাহী" স্থাপন করা হয়।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানবতার সেবায় কাজ করে আসছে। সেই মানবিক কাজের অংশ হিসেবে সমাজের গরিব, দুঃস্থ অসহায় মানুষের জরুরী প্রয়োজনে "পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, আরএমপি রাজশাহী" হতে বিনামূল্যে রক্ত সরবরাহ করা হবে। মাননীয় আইজিপি মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশকে আরো গণমুখী ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।
ইতোপূর্বে সেই লক্ষ্য অর্জনে করোনা প্রতিরোধে প্রায় দেড় লক্ষ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিরতণ করা হয়েছে। লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া ১০ হাজারের অধিক অসহায়, দুস্থ, প্রতিবন্ধী নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
দরিদ্র অসহায় মেধাবীদের মাঝে শিক্ষোপকরণ বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। শারিরীক প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়েছে। একই ভাবে আরএমপি'র সকল সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মেডিকেল টেস্টের ক্ষেত্রে ছাড়ের জন্য পুলিশ কমিশনারের সাথে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশ কমিশনার মহোদয় বলেন, পুলিশ ব্লাড ব্যাংক জনসেবায় আরএমপি'র নতুন ডাইমেনশান। এই পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের মাধ্যমে একদিকে মানবতার চর্চা করে আরএমপি অনন্য উচ্চতায় আসীন হবে, অন্য দিকে জনগণের সাথে পুলিশের দূরুত্ব ঘুচিয়ে জন প্রত্যাশা পূরণে পথ সুগম করবে। রক্তের বিকল্প কেবল মাত্র রক্তই। অন্য কিছুর বিনিময়ে তা পূরণীয় নয়। তিনি স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।ব্ক্তব্য শেষে পুলিশ কমিশনার মহোদয় পুলিশ ব্লাড ব্যাংকে নিজে স্বেচ্ছায় রক্ত দেন এবং সেখান ব্লাড গ্রুপিং, ব্লাড স্ক্রিনিং এর ব্যবস্থা ছিলো।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) জনাব মোঃ সাজিদ হোসেন,উপ-পুলিশ কমিশনার (শাহমখদুম) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিক)জনাব মোঃ সাইফউদ্দীন শাহীন,উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব অনির্বান চাকমা, উপ-পুলিশ কমিশনার (কাশিয়াডাঙ্গা) জনাব মোঃ মনিরুল ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার (এস্টেট ও উন্নয়ন) জনাব মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম,বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজশাহী'র তত্ত্বাবধায়ক জনাব ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।