আরএমপি নিউজ: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ কমিশনার মো: আনিসুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) রাজশাহীস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
আজ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬ টায় আরএমপি সদরদপ্তরে আরএমপি'র সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ কমিশনারের সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুলিশ কমিশনারকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
সদ্য যোগদানকৃত পুলিশ কমিশনার বলেন, আজকের শুভ ক্ষণে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁর অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে লাভ করেছি বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। সেই সাথে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী পুলিশকে নেতৃত্বদানকারী তৎকালীন রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি শহিদ মামুন মাহমুদ ও রাজশাহীর পুলিশ সুপার শাহ্ আব্দুল মজিদ-কে যাঁদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আপনারা স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আরো স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর পুলিশ সদস্য-সহ শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
তিনি আরও বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ নামক এই স্বাধীন রাষ্ট্রটি পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালির জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লক্ষ প্রাণের বিনিময় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ নামক এই স্বাধীন রাষ্ট্রটি পেয়েছি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধারা তাই আমাদের পরম শ্রদ্ধার পাত্র। আপনারা জাতির সূর্য সন্তান, আমাদের গর্ব ও অহংকার। আমরা আপনাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছি। সর্বক্ষেত্রে আপনাদের পরামর্শ আমাদের একান্ত কাম্য। তাই পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদানের পরপরই আপনাদের সাথে পরিচিত হওয়া ও পরামর্শ গ্রহণের জন্য এই সভার আয়োজন করেছি। আপনারা উপস্থিত হয়ে আমাকে সম্মানিত করেছেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। তাঁর নেতৃত্বে ‘রূপকল্প ২০৪১’ অর্জনের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক সমাজব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সর্বস্তরে জবাবদিহিমূলক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর। স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক যেকোনো প্রয়োজন ও সংকটে পুলিশ সদস্যগণ পেশাগত যোগ্যতা, দক্ষতা এবং সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে আসছেন।তাছাড়া সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার সক্ষমতা আমাদের সহজাত। মহান মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র প্রতিরোধের রক্ত আমাদের ধমনীতে। আমরা আন্তরিক নিষ্ঠা, সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে হয়ে উঠতে চাই জনবান্ধব পুলিশ। আপনাদের পরামর্শে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে রাজশাহী মহানগরবাসীর সেবা করতে চাই।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রত্যক্ষ ঘটনাবলী স্মৃতিচারণ করেন। পুলিশ কমিশনারের যোগদানের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করায় মুক্তিযোদ্ধাগণ পুলিশ কমিশনারের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে পুলিশ কমিশনারের পাশে থাকার কথাও ব্যক্ত করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল-সহ রাজশাহীস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ-সহ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো: ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) বিজয় বসাক, বিপিএম, পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক অ্যান্ড ডিবি) জনাব সামসুন নাহার, বিপিএম-সহ আরএমপি'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।