আরএমপি নিউজ: জাতিসংঘ সদর দফতর প্রাঙ্গনে শহীদ মিনার অথবা যেকোনও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের আহ্বান আসতে হবে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী মিশন থেকে। এরপরই সাধারণ পরিষদ তা নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাববে। একইভাবে বাংলাকে জাতিসংঘের সপ্তম দাফতরিক ভাষায় পরিণত করার ব্যাপারটিও নির্ভর করে সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্তের ওপর।
বাঙালির মায়ের ভাষার জন্য অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেওয়ার অবিস্মরণীয় দিন ২১ ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে গণ্য করেছে। সেই আলোকে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম কথ্যভাষা হিসেবে বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষায় পরিণত করার একটি অনুরোধ রয়েছে-যা অনেক পুরনো।
১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংকালে এমন প্রসঙ্গের অবতারণা করেন তিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা লাবলু আনসার।
জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক উপরোক্ত তথ্য জানানোর প্রাক্কালে বলেন, “মাতৃভাষা দিবসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন, ভাষা এবং সংস্কৃতির বৈচিত্র খুবই প্রয়োজনীয় এবং তা ঘিরেই আমাদের বহুমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তবে জাতিসংঘের ছয়টি দাফতরিক ভাষার সাথে সপ্তম ভাষা হিসেবে যোগ করার ব্যাপারটি একান্তভাবেই সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে আমি মনে করি।”
আরেকটি প্রশ্ন ছিল মাতৃভাষা রক্ষার তাগিদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল অনুপ্রেরণা হিসেবে জাতিসংঘের সদর দফতর প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কোনও সম্ভাবনা আছে কি? শহীদ মিনার বলতে এক ধরনের কাঠামো বোঝায়, যা শৈল্পিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক কারণে আত্মত্যাগকারী লোকদের স্মরণে নির্মিত।
জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র ডুজারিক জানান, “যেকোনও ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ বা শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জাতিসংঘে একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, যেটি শুরু হতে হয় সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী মিশন থেকে। অর্থাৎ এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মিশনকে প্রস্তাব উপস্থাপন করতে হবে।”
তবে বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষায় পরিণত করার আহ্বানটি অনেক আগে (স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন) বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। আর্থিক অজুহাতে সেই রেজ্যুলেশনটি পাস হতে পারেনি বলে সে সময় জানানো হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ রয়েছে যে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ বাংলাদেশ ও ভারতের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে, এবং তা রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটকেও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে নিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে জাতিসংঘের সর্বশেষ অবস্থান কী?
এমন প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক ইস্যুটি মিয়ানমার এবং ভারতের মধ্যেকার কি না জানতে চাইলে প্রশ্নকর্তা জানান, মিয়ানমার সামরিক জান্তার সাথে মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের। এরপর ডুজারিক বলেন, মিয়ানমারের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আমরাও বিচলিত এবং উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে অতি সম্প্রতি মিয়ানমার সামরিক জান্তার লেলিয়ে দেওয়া বিমান বাহিনী কর্তৃক স্কুলে হামলার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তামূলক কার্যক্রমকেও আমরা সীমিত করতে বাধ্য হয়েছি। তাই আমরা সর্বত্র আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছি পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ অবসানের লক্ষ্যে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন।