চোটের কারণে আন্তর্জাতিক বিরতিতে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচের স্কোয়াড থেকে ছিটকে গিয়েছেন লিওনেল মেসি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রীতি ম্যাচে মেসিবিহীন আর্জেন্টিনার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের একচেটিয়া দাপটের ম্যাচে শক্তি সামর্থ্যে বেশ পিছিয়ে থাকা এল সালভাদর হেরেছে ৩-০ গোলে। আর্জেন্টিনার হয়ে গোল ৩টি করেছেন ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, এনজো ফার্নান্দেজ এবং জিওভানি লো সেলসো।
তিন গোলে পাওয়া এ জয় অবশ্য ম্যাচে আর্জেন্টিনার দাপুটে ফুটবলকে বোঝাতে মোটেই যথেষ্ট নয়। এদিন বল দখল, আক্রমণ কিংবা সুযোগ তৈরি—কোথাও আর্জেন্টিনাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি এল সালভাদর। প্রায় পুরোটা সময় আর্জেন্টিনার আক্রমণের ঝড়গুলো সামলে সময় পার করেছে তারা।
আর্জেন্টিনার ৮০ শতাংশ বল দখলের বিপরীতে এল সালভাদর দখলে বল ছিল মাত্র ২০ শতাংশ সময়। আর আর্জেন্টিনা যেখানে ২৪টি শট নিয়ে ১৪টি লক্ষ্যে রেখেছে, এল সালভাদর সেখানে শটই নিতে পেরেছে মাত্র ২টি। দুই দলের পরিসংখ্যানে বিশাল পার্থক্যেই মূলত ফুটে উঠছে ম্যাচের প্রকৃত চিত্র। আর্জেন্টিনা কিছু সুযোগ মিস না করলে এবং এল সালভাদরের রক্ষণ ও গোলরক্ষক দারুণভাবে কিছু আক্রমণ ঠেকিয়ে না দিলে ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত।
ফিলাডেলফিয়ার লিংকন ফিন্যান্সিয়াল ফিল্ডে ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে যেতে শুরু করে আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠের দখল নিয়েই আক্রমণগুলো তৈরি করে তারা। আর্জেন্টিনা আক্রমণাত্মক খেলার ফল পেয়েছে ম্যাচের ১৬ মিনিটে। কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করে আর্জেন্টিনাকে লিড এনে দেন রোমেরো।
এগিয়ে গিয়ে আক্রমণের ধার আরও বাড়ায় লিওনেল স্কালোনির দল। ২৬ মিনিটে দি মারিয়াকে নিরাশ করেন এল সালভাদর গোলরক্ষক। ২৯ মিনিটে অবশ্য সমতা ফেরানোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল এল সালভাদর; যদিও সেই আক্রমণ থেকে গোলের দেখা পায়নি তারা। ৪২ মিনিটে আর্জেন্টিনার হয়ে ব্যবধান ২-০ করেন এনজো ফার্নান্দেজ। দলীয় আক্রমণ থেকে পাওয়া সুযোগ হাতছাড়া করেননি এ চেলসি তারকা। দুই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতির পরও দেখা মিলেছে একই চিত্রের। আর্জেন্টিনার ঝড়ের সামনে এল সালভাদরের কোনো রকমের টিকে থাকার চেষ্টা। এরপরও তৃতীয় গোলটি আদায় করে নেয় আর্জেন্টিনা। ৫২ মিনিটে ম্যাচে আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি করেন লো সেলসো। এই গোলটিও ছিল দলীয় সমন্বয়ের দারুণ এক প্রদর্শনী। মাঝমাঠে ছোট ছোট পাসে আক্রমণটি তৈরি করে আর্জেন্টিনা। এরপর লাওতারো মার্তিনেজের দারুণ এক অ্যাসিস্টে বক্সের ভেতর থেকে লক্ষ্যভেদ করেন লো সেলসো।
তিন গোলে এগিয়ে গিয়েও আক্রমণের ধার কমায়নি আর্জেন্টিনা। দুই প্রান্ত এবং মাঝমাঠের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখে একের পর এক আক্রমণে যায় তারা। তবে এল সালভাদরের রক্ষণ ভেদ করে আর কোনো গোল পায়নি মারিয়া–মার্তিনেজরা। তিন গোলের জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় আর্জেন্টিনাকে।
২৭ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেসে আর্জেন্টিনা পরের ম্যাচ খেলবে কোস্টারিকার বিপক্ষে। কোপা আমেরিকার আগে এ প্রীতি ম্যাচগুলোকে পাখির চোখ করেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
সূত্র: প্রথম আলো।