যারা আমাদের দেশের নাগরিকদেরকে প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশে নিয়েছে, যাদের কারনে এই নির্মম মৃত্যু ঘটেছে তাদের একজনকেও ছাড় দেয়া হবে না। তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে এই চক্রের প্রত্যেক সদস্যকে আইনী প্রক্রিয়ায় কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে যেনো ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশীকে এভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, তার জীবন নিয়ে খেলার দুঃসাহস কোনো মানুষ দেখাতে না পারে। দেশে ও বিদেশে যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেনো — এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে।
স্বজনদেরকে যারা ভাই বোন পিতা মাতা হারা করেছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই। নেয়া হবে কঠোর আইনী ব্যবস্থা। স্বজনদের কান্নার দাগ শুকানোর আগেই, এই অপরাধী চক্রকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক আইনী পদক্ষেপ নেয়ার কঠোর নির্দেশ দেন আইজিপি। অত্যন্ত কঠোর নির্দেশে আইজিপি বলেন, “এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পর আমি দ্বিতীয়বার তোমাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো, এর আগে নয়।”
আইজিপি’র কঠোর নির্দেশে, তাৎক্ষনিকভাবে র্যাব, ডিএমপি, সিআইডি, পিবিআইসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিট একযোগে অভিযানে নামে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে ০৭ জুন ২০২০ খ্রি. পর্যন্ত মোট ২২ টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদেরকে চিহ্নিত করে আইজিপি’র নির্দেশে গ্রেফতারে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ইতিমধ্যেই ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। সংশ্লিষ্ট অন্যদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ প্রত্যেক মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের এই অভিযান চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, এভাবে বিদেশ গমণকারী বাংলাদেশিগণ সাধারনত বৈধ
উপায়ে, বৈধ পাসপোর্টে, বৈধ ট্যুরিস্ট বা অন্যান্য ভিসায় প্রথমে ভারত বা
অন্য কোনো দেশে গমণ করেন। এ সকল ক্ষেত্রে, উপযুক্ত ও বৈধ ট্রাভেল
ডকুমেন্ট প্রদর্শণ করেই তারা বাংলাদেশ ত্যাগ করে থাকেন। তারপর, দালাল ও
পাচারকারীদের সহযোগিতায় ভারত বা সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে নানা উপায়ে তারা
লিবিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান।
এছাড়া, কখনও কখনও
দালালের সহযোগিতায় ভিন্ন উপায়ে সীমান্ত পাড়ি দেন কেউ কেউ। বিদেশ
গমণের পন্থা যাই হোক, সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ বা ব্যক্তির কাছ থেকে মানব
পাচারের কোনো অভিযোগ পেলে পুলিশ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যথানিয়মে আসামী
গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে এবং যথা নিয়মেই তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন
বিচারিক কার্যক্রমের জন্য আদালতে প্রেরণ করে থাকে।