গত ০৯/০৭/২০২০ খ্রিঃ দুপুর ০২.৩০ ঘটিকায় মোঃ কামরুল হাসান (৫৮), পিতা-মৃত আব্দুল রশিদ, সাং-পাঠানপাড়া, এ/পি সাং-বর্ণলীর মোড় (শ্রম আদালতের পিছনে), থানা-বোয়ালিয়া, মহানগর রাজশাহী ঔষধ ক্রয় করার জন্য লক্ষীপুর যাবার পথে রাজশাহীতে Royal Cheating Group এর প্রতারক চক্রের চার সদস্য হাতে-নাতে গ্রেফতার। এর একটি প্রতারক চক্র ১০০ রিয়েল ও মোবাইল-০১৮৮৩-৬৯২৮৬১ নম্বর দিয়ে ভাঙ্গিয়ে তাদেরকে আগামীকাল টাকা ফেরত দিতে বলেন। পরবর্তীতে ১০/০৭/২০২০ খ্রিঃ দুপুর ১২.০০ ঘটিকায় অত্র থানাধীন সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট হাসান মানি চেঞ্জার লিমিটেডে সৌদি ১০০ রিয়েল ভাঙ্গানোর পর উক্ত মোবাইলে ফোন করে জানালে প্রতারক চক্র উপরোক্ত ঠিকানার বাসায় যায়। বাসায় গিয়ে মোঃ কামরুল হাসান এর নিকট থেকে বাংলাদেশী নগদ ৮০০ টাকা নেয় এবং ৪০০ টাকা বাদীকে প্রদান করে। এভাবে বিশ^াস স্থাপন করেন। পরে প্রতারক চক্রটি বাদীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় তাদের নিকট বাংলাদেশী ৩,০০,০০০/- টাকা সমমূল্যের সৌদি রিয়েল আছে। ১৪/০৭/২০২০ খ্রিঃ দুপুর ০২.৩০ ঘটিকায় অত্র থানাধীন হেতেমখাঁ কলাবাগান ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সামনে পাকা রাস্তার উপর প্রতারক চক্র রুমালে বাধা পুটলি দিয়ে বাদীর নিকট ৩,০০,০০০/- টাকা নেয়। বাদী রুমালে বাধা পুটলিটি নিয়ে বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে বাসায় এসে রুমাল দিয়ে বাধা পুটলি খুলে দেখেন সেখানে সবগুলো খবরের কাগজ। বাদী প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। ১৬/০৭/২০২০ খ্রিঃ ১৫.০০ ঘটিকায় বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন বর্ণালীর মোড়ের পিছনে ‘‘বর্ণালী রক্স জেন্টস পার্লার’’ এর সামনে পাকা রাস্তার উপর হতে রাজশাহীতে Royal Cheating Group এর প্রতারক চক্রের চার সদস্য হাতে-নাতে গ্রেফতার। এর প্রতারক চক্রের সদস্য আসামী ১। মোঃ আলমগীর হোসেন (২৯) মোবাইল নং-০১৮৯৩-৭৭৮২১৩, পিতা-মোঃ আফছার তালুকদার, সাং-ঘুনসী মধ্যপাড়া, ২। মোঃ লুৎফর সরদার (৩৫), পিতা-মৃত ছহেদ সরদার, সাং-ঘুনসী দক্ষিনপাড়া, ৩। মোঃ বখতিয়ার হোসেন (৫১), পিতা-মৃত মাজেদ শেখ, সাং-বামনডাঙ্গা বড়বাড়ী, ৪। মোঃ মিজানুর রহমান (৩২), পিতা-মৃত গুনজর আলী, সাং-ব্যাটক্যামারী, সর্ব থানা-মোকসুদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জগণকে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করেন এবং তাদের গ্রæপের দুইজন সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের নিকট হ’তে ০৩টি সৌদি আরবের ONE HUNDRED RIYALS নোট, ও ০২টি লাল রংয়ের গামছায় বিশেষ কায়দায় বাঁধা অবস্থায় কিছু পত্রিকার কাগজ(যা আসামীরা সৌদি রিয়েল এর ব্যান্ডিল হিসেবে প্রতারণার কাজে ব্যবহার জব্দ করে) উদ্ধারপূর্বক হেফাজতে গ্রহণ করে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সহযোগী পলাতক আসামীদের নাম-ঠিকানা বলেছেন। ধৃত আসামীগণ স্বীকার করেন যে, চলতি মৌসুমে তাদের প্রতারকচক্রটি জনসাধারণের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ১,০০,০০০,০০/-(এক কোটি) টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। উক্ত চক্রটি কখনো কখনো সোনার গহনা সদৃশ গহনা, সোনার বার সদৃশ বার প্রদর্শন করেও জনগণকে প্রতারিত করে থাকে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। আসামীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাদের ভাড়া বাসা হতে তল্লাশী করে ১ নং আসামী মোঃ আলমগীর হোসেন এর ব্যাগ থেকে তার নিজ এ্যাকাউন্টে ১৪/০৭/২০২০ খ্রিঃ টাকা জমার রশিদ জব্দ করা হয়। আসামীগণ প্রতারণার মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টাকা তাৎক্ষনিকভাবে আতœীয় স্বজন ও স্ত্রীর নিকট ব্যাংক ও বিকাশ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা প্রেরণ করে থাকেন।
থানার রেকর্ডপত্র ও সিডিএমএস যাচাই করে জানা যায় উক্ত প্রতারকদের বিরুদ্ধে ঢাকা, সিলেট, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, ফেনী, কুমিল্লা, রংপুর, যশোর ও রাজশাহী জেলার বিভিন্ন থানায় চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রতারণা ও বিদেশী মুদ্রা জালিয়াতের মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা অবৈধভাবে আহরিত বিদেশী মুদ্রা নিজ হেফাজতে রেখে ও প্রদর্শন করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদীর কাছে প্রতারনামূলকভাবে আতœসাৎ করে দি স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্ট ১৯৭৪ এর ২৫B(১)(ন) তৎসহ ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড ধারার অপরাধ করেছে মর্মে বাদীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। একই ধরনের ঘটনায় বাদী আনিসুর রহমান (৩৬) এর নিকট গত ০৭/০৭/২০২০ খ্রিঃ প্রতারণার মাধ্যমে ২,০০,০০০/-(দুই লক্ষ) টাকা এবং বাদী মোঃ নান্নু হাসান এর নিকট গত ১৬/০২/২০২০ খ্রিঃ প্রতারণার মাধ্যমে ৩,০০,০০০/-(তিন লক্ষ) টাকা আতœসাৎ করার ঘটনা সহ সর্বমোট তিনটি মামলা রুজু হয়েছে। সংক্ষুদ্ধ ০৩ জন বাদীই গ্রেফতারকৃত প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এভাবে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিরীহ জনগণকে প্রতারিত করার রহস্য উদ্ঘাটন, আসামীদের সনাক্তপূর্বক গ্রেফতার ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।