আরএমপি নিউজ: জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউট ইমোশন রিকগনিশন নিয়ে কাজ করছে৷ ফেসিয়াল রিকগনিশনের মতো এই প্রযুক্তিও ভবিষ্যতে নজরদারিতে ব্যবহৃত হতে পারে৷
একেক মানুষ একেকভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে৷ তাই একই আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে একেকজনের মুখের অভিব্যক্তি একেকরকম হয়৷ জার্মানির ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে এসব অভিব্যক্তি চেনার সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে৷ কিন্তু সব সংস্কৃতির মানুষই কি একইভাবে রাগ, ভালো লাগা প্রকাশ করে?
ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউটের ইয়েন্স গারবাস বলেন, ‘‘মুখের অনেক অভিব্যক্তি দেখে আবেগ বোঝা যায়৷ যেমন পেশীর নড়াচড়া, হাসি, রাগ, দুঃখ ইত্যাদি৷ বেশিরভাগ সংস্কৃতিতে বিষয়টা একই৷ মানুষ হিসেবে আমি মুখ দেখে যতটা আবেগ বুঝতে পারি সেটা সফটওয়্যারকেও শেখানো যায়৷ এবং এক্ষেত্রে সফলতার হার অনেক বেশি৷”
ফ্রাউনহফারের বিজ্ঞানীরা মুখের অভিব্যক্তির ছবি দিয়ে সফটওয়্যারকে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু এটা প্রয়োজন কেন?
গারবাস বলেন, ‘‘একটা সাধারণ ব্যবহার হচ্ছে মেশিন ও মানুষের মধ্যে ভাব বিনিময়৷ যেমন এর মাধ্যমে সোশ্যাল সিগন্যাল ও মুখের অভিব্যক্তি সম্পর্কে অটিস্টিক শিশুদের প্রশিক্ষণ দিতে রোবটকে ব্যবহার করা যায়৷ এছাড়া গাড়ি চালানোর সময়ও এর ব্যবহার আছে৷ চালকের মানসিক অবস্থা বোঝা, তিনি বেশি চাপে আছেন কিনা, কোনো কিছু নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে আছেন কিনা, তা বোঝা যেতে পারে৷’’
ইয়েন্স গারবাস বলেন, ‘‘এই প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের উপর নজর রাখা, তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে৷ তাই এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি৷ সেটা তখনই সম্ভব যখন আমরা ভালোভাবে জানবো যে, এটা দিয়ে কী করা যায়, আর কী যায় না৷ এছাড়া প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে থাকাটাও জরুরি৷’’
তাদের সফটওয়্যার দিয়ে এখনও নজরদারি করা হচ্ছে না বলে জানান ফ্রাউনহফারের বিজ্ঞানীরা৷ ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির উন্নতির কারণে এখন সেটা দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে ইমোশন রিকগনিশন প্রযুক্তি কাজ শুরু করলে মানুষের আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে৷
আইটি বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক মার্কুস বেকেডাল বলেন, ‘‘তখন আমরা ভাব প্রকাশে আরো সতর্ক হবো৷ ফলে স্বাধীনভাবে ভাব প্রকাশ করতে পারবো না৷ সবসময় মনে হবে আমাদের কেউ দেখছে৷ সুতরাং হাসো৷ নইলে ভবিষ্যতে এই ছবি তোমার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে৷ ইতিমধ্যে চীনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়া শুরু করেছে৷ আমার আশা, জার্মানিতে যেন কখনও এমন অবস্থা তৈরি না হয়৷’’
চীনে ব্যাপকভাবে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে৷ উদ্দেশ্য মানুষকে নিয়ন্ত্রণে রাখা৷ হলিউডের মাইনোরিটি রিপোর্ট মুভিতে ২০ বছর আগে যা দেখানো হয়েছে এখন সেটা বাস্তবে চলে এসেছে৷ টম ক্রুজ যেমন নজরদারির মধ্যে ছিলেন, এখন চীনে সেটা হচ্ছে৷ অর্থাৎ আমরা যতটা ভাবছি, ভবিষ্যৎ তার চেয়েও কাছে চলে এসেছে৷