করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় দেশের সবচেয়ে বড় কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ রোববার রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত এক হাজার শয্যা বিশিষ্ট ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল’ টির উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালটি উদ্বোধন কালে জাহিদ মালেক বলেন, ‘গোটা বিশ্বের ন্যায় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেই আমাদের দেশেও হানা দিয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন ভীতিকর হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার সব হাসপাতালের আইসিইউ বেড পুর্ণ হয়ে গেছে।প্রতিদিনই আইসিইউ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।এরকম একটি কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জরুরি ভিত্তিতে ডিএনসিসির এই মার্কেটটিকে একটি পুর্ণাঙ্গ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে উদ্বোধন করা হলো।’
তিনি বলেন, ‘এই হাসপাতালে কোভিড রোগীদের জন্য মোট বেড সংখ্যা রয়েছে ১০০০ টি। এর মধ্যে পুর্ণাঙ্গ আইসিইউ বেড আছে ২১২ টি, এইচডিইউ বেড আছে ২৫০ টি, কোভিড আইসোলেটেড রুম আছে ৪৩৮ টি। এখানে এমার্জেন্সি বেড আছে ৫০ টি, যার ৩০ টি পুরুষ ও ২০ টি মহিলা রোগীর জন্য। এর পাশাপাশি এখানে আটটি পিসিআর ল্যাব, প্যাথলজি ল্যাব, রেডিও থেরাপি সেন্টার, এক্সরে সুবিধাসহ অন্যান্য নানাবিধ সুবিধাদি রয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাত্র ২০ দিনের মধ্যে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অতি দ্রুততার সাথে এই হাসপাতালটি প্রস্তুত করা হয়েছে।উদ্বোধনকালে হাসপাতালটির ২৬০ টি বেড সচল হচ্ছে।যেখানে আইসিইউ বেড রয়েছে ৬০ টি,ইমার্জেন্সি ৫০ টি, জেনারেল ওয়ার্ড ১৫০ টি। আগামী সাত দিনের মধ্যে আরো আড়াই’শ বেড সচল হবে এবং এ মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে হাসপাতালটি পরিপূর্ণভাবে সচল হবে বলে জানান তিনি।
দেশের প্রতিটি হাসপাতালে কোভিড ডেডিকেটেড বেড সংখ্য বৃদ্ধি ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাদি বৃদ্ধি করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ১০০ টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাবস্থা চালু করা হয়েছে। আরো ৩৪ টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাবস্থা চালুর কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে বর্তমানে দেশে প্রায় ১২০০০ বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এসব সুবিধাদি নিশ্চয়ই দেশের কোভিড রোগীদের জীবন রক্ষায় বড় ভুমিকা রেখে চলেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী কাঁচাবাজারের ছয় তলা বিশিষ্ট এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট আয়তনের ফাঁকা ভবনে এই হাসপাতাল চালু হলো। এতদিন মার্কেটটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার এবং বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ল্যাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হলেও পৃথকভাবে ওই সেবা কার্যক্রমগুলো চলবে।
এরইমধ্যে ১৫০ জন চিকিৎসক হাসপাতালে যোগদান করেছেন, নার্স যোগদান করেছেন ২০০ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী যোগদান করেছেন ৩০০ জনের মতো। এছাড়া এই হাসপাতালে সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রায় ১৫০ জন চিকিৎসক ও বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ কর্মীরা সহযোগিতা করছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়।