আরএমপি নিউজঃ শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ ১৯২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলার কেন্দুয়া থানায় জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম আজিমুদ্দিন আহমেদ, মাতার নাম ফাতেমা বেগম। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পিতা-মাতার জৈষ্ঠ সন্তান।
তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ সালে আয়শা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরে জন্ম নেয় ০৩ ছেলে ও ০৩ মেয়ে সন্তান। সন্তানদের মধ্যে সাহিত্যিক ড.হুমায়ুন আহমেদ, লেখক ও শিক্ষাবিদ ড.মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব খ্যাতিমান।
১৯৩৯ সালে কিশোরগঞ্জ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৪১ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি ১৯৪৩ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৬ সালে এসআই পদে বেঙ্গল পুলিশে যোগদান করে সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষন শেষে সিলেট জেলায় নিযুক্ত হন। চাকরি জীবনে তিনি পঞ্চগড়, রাঙ্গামাটি, বান্দরবন, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও কুমিল্লায় দায়িত্ব পালন করেন।
কর্মজীবনের একটি বড় অংশ ডিএসবি-তে অতিবাহিত করেন তিনি । ১৯৭১ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পিরোজপুর মহকুমার সাব ডিভিশনল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও)হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলা-বারুদ দিয়ে সহায়তা করেন। ৫ মে পিরোজপুরে পাকবাহিনীর হাতে বন্দি হন। একই দিনে পাকবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল আতিক ও ক্যাপ্টেন এজাজের নেতৃত্বাধীন হানাদার বাহিনী ধলেশ্বরী নদীর তীরে নিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করেন। তার মৃতদেহ নদীতে নিক্ষেপ করেন। কয়েকদিন পর গ্রামবাসি কর্তৃক নদীর তীরে তাকে দাফন করা হয়।
স্বাধীনতার পর তার মৃতদেহ কবর থেকে তুলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক জানাযা পরাসহ পূর্ণ মর্যাদায় পিরোজপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহিদ ফয়জুর রহমান আহমেদকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে স্বধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর)প্রদান করেন।
তথ্যসূত্রঃ
- মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভুমিকা (১ম খন্ড), পৃষ্ঠা নং-৫৪৭
- উইকিপিডিয়া