জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২ হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকার ০৪টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদিত ৪টি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি সংশোধিত এবং একটি নতুন। অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে।
প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ৪০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আজকের সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে ‘ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে।
প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২ হাজার ৫৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সংশোধনীতে ৭৪১ কোটি ৫৪ লাখ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩ হাজার ৩১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংশোধনীতে মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
একই মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন’ প্রকল্পটি নতুন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ৬৯৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা খরচে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম জানান, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত SEA-ME-WE-6 সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূ-মধ্য সাগর অবধি বিস্তৃত হবে। ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিশর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারস্থ ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মিউনিসিপ্যাল গভারন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস’ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছিল দুই হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আজকের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হলো ২ হাজার ৭৪৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এসময় একনেক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযু্ক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।