Tuesday, 23 April 2024

   08:10:17 PM

logo
logo
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ১২ বছরের নিরন্তর পরিশ্রমের ফসল: প্রধানমন্ত্রী

3 years ago

আরএমপি নিউজ: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণকে একটি ঐতিহাসিক গর্বের বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ১২ বছরের সরকার পরিচালনায় নিরন্তর পরিশ্রম এবং পরিকল্পনার ফসল হচ্ছে আমাদের আজকের এই অর্জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের যে অর্জন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, তা আমাদের বিগত ১২ বছরের নিরলস পরিকল্পনা, পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টার ফসল। দেশের মানুষই এসব করেছেন। আমরা সরকারে থেকে শুধু নীতি-সহায়তা দিয়ে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তৃতায় একথা বলেন।
তিনি আজ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সাংবাদিকরা পিএমও থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
জাতির পিতার ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা- এই তিনটি সূচকের ভিত্তিতে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি মানদন্ডই খুব ভালোভাবে পূরণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ পুনরায় সকল মানদন্ড অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে পূরণের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করলো।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের পর্যালোচনায় ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয়ের মানদন্ড নির্ধারিত ছিল ১ হাজার ২২২ মার্কিন ডলার। ঐ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৮২৭ ডলার। আর বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। অর্থাৎ মানদন্ডের প্রায় ১ দশমিক ৭ গুণ। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদন্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫ দশমিক ৪। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদন্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। কিন্তু ঐ সময়ে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭।
শেখ হাসিনা বলেন, এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
তিনি এ সময় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ণের কিছু চুম্বক অংশ তুলে ধরে বলেন, ২০০৮-০৯ বছরে জিডিপি’র আকার ছিল মাত্র ১০৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯-২০ সালে তা ৩৩০ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ গণভবনে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গতকাল (২৬ ফেব্রুয়ারি) স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছি।
‘সমগ্র জাতির জন্য এটা অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের। আমাদের এই উত্তরণ এমন এক সময়ে ঘটলো, যখন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করছি; আমরা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের দ্বারপ্রান্তে।’
বাংলাদেশের জন্য এই উত্তরণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এই অর্জনকে দেশের নতুন প্রজন্মকে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী।