যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে মঙ্গলগ্রহে সফলভাবে অবতরণ করল চীনা নভোযান জুরং। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবার (১৫ মে) মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করেছে চীনা নভোযান ‘তিয়ানওয়েন-১’-এর অংশ ‘জুরং’ নামের ছয় চাকার ওই বিশেষ নভোযানটি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরছে এই মহাকাশযান। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলে পৌঁছায় জুরং। প্রায় তিন মাস এর চারপাশ প্রদক্ষিণ করে নানা তথ্য উপাত্ত ও ছবি সংগ্রহ করে এটি। অবশেষে ১৫ মে কয়েকটি ধাপে এটি সফলভাবে অবতরণ করে মঙ্গলের উত্তর মেরু অঞ্চলে।
আগামী তিন মাস এটি মঙ্গলে বিচরণ শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিবিদ্যার এক পৌরাণিক নাম অনুসারে জুরংয়ের নামকরণ করা হয়েছে। এর উচ্চ-রেজলুশন টোগোগ্রাফি ক্যামেরাসহ ছয়টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র রয়েছে।
এখন সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে অন্তত ৯০টি মঙ্গলীয় দিবস সেখানে অবস্থান করবে জুরং। এই দীর্ঘ সময়ে নানা নমুনা সংগ্রহ করবে ওই রোভার। এটি খতিয়ে মঙ্গলপৃষ্ঠের গঠন দেখবে। বরফের সন্ধান করবে। যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নজরে আসে তবে সেটিকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণও করবে জুরং। মঙ্গল অভিযান নিয়ে অত্যন্ত উচ্চাশা রয়েছে চীনের। দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থার কর্মকর্তা চি ওয়াংয়ের দাবি, এ পর্যন্ত মঙ্গলে যত অভিযান হয়েছে, তার মধ্যে তাঁদের এই মিশনই সেরা হতে যাচ্ছে। সৌরজগতের চার নম্বর গ্রহের আবহাওয়া ও ভূপৃষ্ঠ থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি বিষয়ে চীন পর্যবেক্ষণ চালাবে বলে দাবি চি ওয়াংয়ের। এর ফলে লালগ্রহ সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য জানা যাবে।
কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশ অভিযানে অনেকগুলো মাইলফলক ছুঁতে চায় চীন। সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিযানের প্রথম ধাপ গত ফেব্রুয়ারিতেই পেরিয়েছিল দেশটি। তখনই পরিকল্পনা করা ছিল যে, প্রায় মাস মঙ্গলের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে ‘তিয়ানওয়েন-১’-এর রোভার আলাদা হয়ে গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করে সেখানে জীবনের চিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলে সফলভাবে কাঙ্ক্ষিত অবতরণ করে নাসার রোভার ‘পারসিভিয়ারেন্স’। মঙ্গলের বুকে প্রথম রোভার নেমেছিল ১৯৯৭ সালে। এরপর একে একে সেখানে পা রাখল ‘জুরং’সহ ছয়টি রোভার।